আম
আম ম্যাঙ্গিফেরা গণের বিভিন্ন প্রজাতির গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় উদ্ভিদে জন্মানো এক ধরনের সুস্বাদু ফল।কাঁচা অবস্থায় আমের রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় হলুদ হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খাওয়ার জন্যই এই ফল চাষ করা হয়। এই প্রজাতিগুলোর বেশিরভাগই বুনো আম হিসেবে প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। গণটি এনাকার্ডিয়াসি (Anacardiaceae)পরিবারের সদস্য। আম ভারতীয় উপমহাদেশীয় ফল। এর আদি নিবাস দক্ষিণ এশিয়া। সেখান থেকেই গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের একটি সাধারণ ফল হয়ে "সাধারণ আম" বা "ভারতীয় আম" যার বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা (Mangifera indica),অন্যতম সর্বাধিক আবাদকৃত ফল হিসেবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।
ম্যাঙ্গিফেরা গণের অন্যান্য প্রজাতি গুলো (যেমন হর্ষ ম্যাঙ্গো, ম্যাঙ্গিফেরা ফ্লোটিডা) স্থানীয়ভাবে আবাদ করা হয়। ধারণা করা হয়, আম প্রায় সাড়ে ৬০০ বছরে পুরনো। আম ফল সারা পৃথিবীতে খুবই জনপ্রিয়, এরকম পছন্দের ফল পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এমন কোন জাতি নেই যারা আম পছন্দ করেনা।তাই একে সম্মান দিয়ে ফলের রাজা বলা হয়। আমের জন্ম স্থান নিয়ে রয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। বৈজ্ঞানিক "ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা" নামের এ ফল ভারতীয় অঞ্চলের কোথায় প্রথম দেখা গেছে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমাদের এ জনপদের সম্পর্কে জানা যায় খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭- এ আলেকজান্ডার সিন্ধু উপত্যকায় আম দেখে ও খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
এসময়ই আম ছড়িয়ে পড়ে মালয় উপদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া্ ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও মাদাগাস্কারে। চীন পর্যটক হিউয়েন সাং ৬৩২ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই অঞ্চলে ভ্রমণে এসে বাংলাদেশের আমকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করেন। ১৩৩১খ্রিস্টাব্দ থেকে আফ্রিকায় আম চাষ শুরু হয়। এরপর ১৬ শতাব্দীতে পারস্য উপসাগরে, ১৬৯০ সালে ইংল্যান্ডের কাচের ঘরে,১৭ শতাব্দীতে ইয়েমেনে, উনবিংশ শতাব্দীতে ক্যানারিদ্বীপপুঞ্জে,১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালি খবর ১৭ শতাব্দীতে ইয়েমেনে নবীন সরকার ক্যানেলের দ্বীপপুঞ্জে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালিতে আম চাষের খবর জানা যায়। ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাটিতে প্রথম আমের আঁটি থেকে গাছ হয়।
এভাবেই আম ফলটি বিশ্ববাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। জানা যায় মোগল সম্রাট আকবর ভারতের শাহবাগের দ্বারভাঙ্গায় একলাখ আমের চারা রোপন করে উপমহাদেশে প্রথমে একটি উন্নত জাতের আম বাগান সৃষ্টি করেন। প্রধানত চারটি আমের বর্ণনা নিম্নরূপ :-
সুচীপত্রঃ
পশ্চিমবঙ্গের একটি বিখ্যাত আম।এছাড়া বাংলাদেশের মেহেরপুর,চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরা জেলাতেও এই আমের চাষ হয়।এই আমের মিষ্টি সুগন্ধ ও স্বাদ পৃথিবীর অন্যান্য আমের থেকে ভিন্ন তাই সারা পৃথিবীতে স্বাদ ও গন্ধের জন্য এই আম বাণিজ্যিকভাবে বহুল পরিমাণে চাষ করা হয়।হিমসাগর আম এতই জনপ্রিয় যে, এই আমকে আমের রাজা বলা হয়।
ল্যাংড়া আম বা বারানসী আম হল আমের একটি বিখ্যাত জাত যা ভারত, বাংলাদেশ্, ও পাকিস্তানে চাষ
করা হয়।এটি ভারতের অন্যতম একটি বিখ্যাত আম।এটি পশ্চিমবঙ্গ সহ সমগ্র উত্তর ভারতে
চাষ করা হয়। এই আম পাকার পর গায়ের রং হলুদ হয় । জুলাই মাসের দিকে এই আম পাকতে শুরু করে এবং বাজারে পাওয়া যায়। এই আমকে ছোট ছোট টুকরো করার ক্ষেত্রে আদর্শ বলে মনে করা হয়। এছাড়া নানা আম থেকে তৈরি খাদ্যের ক্ষেত্রেও আদর্শ বলে মনে করা।
ফজলি বা ফকির ভোগ হলো আমের একটি প্রকারভেদ। এই ফল দক্ষিণ এশিয়া পূর্বদিকে বিশেষ করে
বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে পাওয়া যায় ।আমের অন্যান্য প্রজাতির থেকে দেরিতে ফলে এই জাতটি।সাধারণত চাটনি ও আচার
তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ফজলি আম।আকারে বেশ বড় আমের এই জাতের ওজন এক কিলোগ্রাম বা তারও বেশি হতে পারে।বাংলাদেশের উত্তর দিকে্র রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা জেলা ফজলি চাষের জন্য
বিখ্যাত। বাংলাদেশের ভোগোলিক নির্দেশক (জি আই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে।
বিভিন্ন ধরনের আমের উল্লেখ বাংলা সাহিত্যে বহুবার এসেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শেষের কবিতা উপন্যাসে নায়ক অমিত রায়কে দিয়ে বলিয়েছেন," কবি মাত্রের উচিত পাঁচ বছর মেয়াদে কবিত্ব করা, ২৫ থেকে ৩০ পর্যন্ত। এ কথা বলবো না যে, পরবর্তীদের কাছ থেকে আরো ভালো কিছু চাই, বলবো অন্য কিছু চাই। ফজলি আম ফুরলে বলবো না, 'আনো ফজলিতর আম।' বলবো,'নতুন বাজার থেকে বড় দেখে আতা নিয়ে এসো তো হে।'"
হাড়িভাঙ্গা আম বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত ও সুস্বাদু আম। বিশ্ব বিখ্যাত এ হাড়িভাঙ্গা আমের উৎপত্তি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোরাগাছ ইউনিয়ন থেকে।বিশ্বখ্যাত,স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় বাংলাদেশের আশা বিহীন হাড়িভাঙ্গা আম। গাছ লক্ষণীয় ও আকর্ষণীয়। পুষ্ট ও বলিষ্ঠ। ডালে জোড় কলম লাগালে গাছ অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। চারা রোপনের পরবর্তী বছরেই মুকুল আসে। হাড়িভাঙ্গা আম গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা ঊর্ধ্বমুখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশি বিস্তার করে। উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়ে না এবং আম কম ঝরে।
ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি আম থেকে চাটনি,আঁচার, আমসত্ব,মোরব্বা, জ্যাম, জেলি ও জুস তৈরি হয়।
আপনি ঘড়ে বসে কাজ করুন ঃ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখুন....
এক নজরে কুরবানির হাট ঈদের tiktok funny tik tok আবু রায়হানের কোরআন তেলাওয়াত
তাওহীদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url