আর্টিকেল লেখার নিয়ম|বাংলা আর্টিকেল|আর্টিকেল লিখার কৌশল
বাংলা ভাষায় আর্টিকেল লেখার চাহিদা বাংলাদেশে দিন দিন বেড়েই চলছে। একটি ভালো মানের আর্টিকেল লেখার কিছু নিয়ম ও কৌশল আছে। পাঠকদের মনে ভাষার দরকারি তথ্য তুলে ধরাই বাংলা আর্টিকেল লেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
আপনি জানতে চেয়েছেন, বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম কিংবা বাংলা আর্টিকেল লেখার কৌশল। বাংলা আর্টিকেল কিভাবে লিখব সে ব্যাপারে আলোচনা করব। এছাড়া বাংলা আর্টিকেল এমন ভাবে লিখবো,যাতে পাঠকদের আকৃষ্ট করে।
আরো পড়ুনঃ SEO কিওয়ার্ডের সম্পর্কে বিস্তারিত
পেজ সূচিপত্র - বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম গুলো
- বাংলা আর্টিকেল দিয়ে ফোকাস কিওয়ার্ড নির্ধারণ
- আকর্ষণীয় টাইটেল নির্বাচন
- বাংলা আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য
- বাংলা আর্টিকেলে ভূমিকা ও পেজ সূচিপত্র
- পোষ্ট যেভাবে লিখবেন
- প্রয়োজনীয় তথ্য আর্টিকেলে তুলে ধরা
- পোষ্ট আর্টিকেলে লিংক যুক্তকরণ
- ফিচার ইমেজ ব্যবহার
- অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইমেজ ব্যবহার
- কপিরাইট বর্জন করতে হবে
বাংলা আর্টিকেল দিয়ে ফোকাস কিওয়ার্ড নির্ধারণ
ফোকাস কিওয়ার্ড একটি পোষ্টের প্রাণ কেন্দ্র।মানুষ একটি অজানা বিষয়কে জানার জন্য যা লিখে সার্চ দেয়,সে লেখাটাই টাইটেলের ফোকাস কিওয়ার্ড।তাহলে মানুষ যা লিখে বেশী সার্চ দেয়,সে লিখাটাই টাইটেলের ফোকাসে লিখতে হবে।পোষ্ট টাইটেল বা শিরোনাম ৫থেকে ৮ শব্দের মধ্যে হতে হবে।টাইটেলের শুরুতে ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।টাইটেল লোভনীয় করে লিখতে হবে।টাইটেলে (? , -। | ) ছাড়া বিশেষ কোন যতি চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে না।টাইটেলে মোট ৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে হতে হবে।
আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই লং টেইল কিওয়ার্ড হতে হবে।কিওয়ার্ডের অ্যাবাউট রেজাল্ট যত কম হয় তত ভালো।প্রথম ১০টি ওয়েবসাইটের মধ্যে নিউজপেপারের সংখ্যা কম হতে হবে। ওপরের চিত্র মোতাবেক লিখতে হবে।
আকর্ষণীয় টাইটেল নির্বাচন
আগে গুগল সার্চের মাধ্যমে দেখে নিবো, কোন বিষয়ের আর্টিকেলটি বর্তমানে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে।আর্টিকেল অনুসন্ধানের মাধ্যমে গুগল কোম্পানী আপনাকে বুঝিয়ে দিবে ,কোন ধরনের আর্টিকেল পাঠক বেশী করে সার্চ দেয়।বাংলা আর্টিকেলের টাইটেলটি অবশ্যই সংক্ষিপ্ত আকারে হতে হবে এবং অর্থ ও তথ্যবহুল হতে হবে।আপনাকে প্রচুর পরিমাণে রিসার্চ করার মন মানসিকতা থাকলে,তবেই আপনি একটি ভালো ইনফরমেটিভ আর্টিকেল লিখতে পারবেন।
ভাষার ভাব ভঙ্গিমা যেন প্রাঞ্জলতা ও পরিমার্জিত হয়। নেটিজেনরা যেন বুঝতে পারে যে,বাংলা আর্টিকেলটির কোন বিষয়ের উপর রাইটার বর্ণনা করেছেন। আমদের সে বিষয়ের উপর অবশ্যই নজর রাখতে হবে।
বাংলা আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য
বাংলা আর্টিকেলের প্যারাগ্রাফ বড় করে লেখবেন না।বর্তমানে এখন আর বড় প্যারাগ্রাফ কেউ পড়তে চায় না,পড়ে মজাও পায়না।তাই ছোট ছোট প্যারা আকারে লিখতে হবে।প্রতিটি প্যারাতেই প্রথমে সর্বনিম্ন সাড়ে তিন লাইন এবং সর্ব্বোচ্চ পাঁচ লাইন পর্যন্ত লেখা যাবে। প্যারাগ্রাফ দির্ঘায়িত হলে ছোট ছোট প্যারা করে লিখতে হবে।যাতে পাঠকের জন্য পড়া সহজ হয় এবং সহজেই বুঝতে পারে।
উদাহরণস্বরুপ, আপনার আর্টিকেলের বিষয়বস্তু হলো-“আর্টিকেল লেখার নিয়ম”তাহলে আপনি প্রতিটি প্যারাগ্রাফে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল লেখার কৌশল,ভাষার মাধুর্য এবং কিভাবে বাংলা আর্টিকেল লিখবো সে সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে পারবেন।
বাংলা আর্টিকেলে ভূমিকা ও পেজ সূচিপত্র
পোষ্টের শুরুতে একটি ভূমিকা বাটন রাখতে হবে।ভূমিকা বাটনের মধ্যে ৫ শব্দ ব্যবহার করা যাবে।ভূমিকা বাটনের মধ্যে অন্য রিলেটেড পোষ্টের ফোকাস কিওয়ার্ড বসাতে হবে।ভূমিকা বা মেটা ডেসক্রিপশন ৪ লাইন লিখতে হবে। ভূমিকা বাটনের নিচে বা ইমেজ ০১ এর উপরে ২লাইন লিখতে হবে।ইমেজ ০১ এর নিচে ও পেজ সূচীপত্রের উপরে ২ লাইন লিখতে হবে।ভূমিকার বর্ণনা সহজ ভাষায় লিখতে হবে।
পেজ সূচিপত্রে ফোকাস কিওয়ার্ড বসাতে হবে।পেজ সূচীপত্রের নিচে প্রয়োজনীয় ১০টা H2(heading) ব্যবহার করতে হবে।প্রথম H2 ফোকাস কিওয়ার্ড দিয়ে হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়ম
পোষ্ট যেভাবে লিখবেন
প্রতিটি H2 ৫ থেকে ৮ শব্দের মধ্যে রাখতে হবে।প্রতিটি H2 এর নিচে সর্বোচ্চ ৫টা প্যারা ব্যবহার করা যাবে। ( , । ) H2 এর নিচে সর্বনিম্ন ২টা প্যারা লিখতেই হবে।প্রতিটি পোষ্ট ভালোভাবে Formating করতে হবে। সবগুলো লিখা Justify format এ রাখতে হবে।প্রতিটি প্যারাই সর্বনিম্ন ৩.৫ লাইন লিখা রাখতে হবে।প্রতিটি প্যারাই সর্বোচ্চ ৫ লাইন লিখা রাখতে হবে।
প্রতিটি পোষ্ট সর্বনিম্ন ১৫০০ শব্দ হতে হবে।শেষকথা/লেখকের মন্তব্য/উপসংহার এর নিচে ২টি প্যারা লিখতে হবে।উপসংহারে পোষ্ট সম্পর্কে নিজস্ব মতামত ব্যাখ্যা করতে হবে।এভাবেই পোষ্টকে প্রাণবন্ত করে তুলতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য আর্টিকেলে তুলে ধরা
আর্টিকেলের মূল অংশে সম্পূর্ণ পোষ্টের সারমর্মের সব প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরুন।তথ্যগুলো সঠিক ও যাচাই করে লিখা উচিত।তথ্যবহুল আর্টিকেল পাঠককে আকৃষ্ট করে এবং তাদের জ্ঞান গরিমা বৃদ্ধি করে।কথায় কথায় উদাহরণ ও তথ্য চিত্র তুলে ধরে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া উচিত। তথ্যগুলি এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে পাঠক সহজেই সব প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি খুঁজে পেতে পারে। তথ্য গুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন করলেই পাঠক বিষয়টি সহজে বুঝতে পারবে।
পোষ্ট আর্টিকেলে লিংক যুক্তকরণ
পাঠকদের অন্য কোন তথ্য পেতে আপনার ওয়েবসাইটের অন্যান্য সামঞ্জস্যপূর্ণ লিংক দিন।প্রতিটি পোষ্ট ৩টি “আরোও পড়ুনঃ” সেকশন বানাতে হবে।আর্টিকেলে লিংক ব্যবহার করলে আপনার পাঠকদের বেশীক্ষণ সাইটে ধরে রাখতে পারবেন। এবং তাদের অন্যান্য তথ্য পেতে সাহায্য করবেন।এতে আপনার ওয়েবসাইটের SEO র্যাংকিং বেড়ে যেতে পারে।উদাহরণস্বরুপ, আপনার আর্টিকেলের বিষয়বস্তু হলো-“আর্টিকেল লেখার নিয়ম” তাহলে আপনি এই বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে “ডিজিটাল মার্কেটিং শিখব কোথায়” এ বিষয়ে আপনার ওয়েবসাইটের অন্যান্য আর্টিকেলে লিংক দিতে হবে।
ফিচার ইমেজ ব্যবহার
আর্টিকেলটি চমকপ্রদ করতে আকর্ষনীয় ফিচার ইমেজ যুক্ত করুন।ফিচার ইমেজ হলো পোষ্ট আর্টিকেলের মেরুদন্ড।পোষ্ট আর্টিকেলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইমেজ ব্যবহার করলে,এটি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষন করে।সঠিক ভাবে ইমেজ ব্যবহার করলে আর্টিকেলটি আরোও পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।অন্য কোন ওয়েবসাইটে ইমেজ লিংক ব্যবহার করা যাবে না। অন্য ওয়েব সাইটের ইমেজ লিংক ব্যবহার করলে ওই ওয়েবসাইটের ইমেজ কখনোও ডিলিট করলে আপনার ওয়েবসাইটের ইমেজ আর দেখাবে না। গুগল সমর্থিত যে ছবিগুলোর অনুমতি দেয় সেই ইমেজ গুলো আপনার পোস্টে সেট করুন।
তাই ফিচার ইমেজটি ডাউনলোড করে নেওয়াই উত্তম।ফিচারে ইমেজটির W—➤1100Px এবং H—➤619Px.সাইজ হতে হবে। তাই আপনার উচিত হবে ভালো মানের ইমেজগুলি যুক্ত করা। উপরের চিত্র মোতাবেক ছবি ডাউনলোড করতে হবে।
অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইমেজ ব্যবহার
পাঠকদের ভালোভাবে বুঝাইতে হলে দরকারি ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। তবে ইমেজের মান বজায় রাখতে হলে আর্টিকেলে বিষয়বস্তুর উপর সামঞ্জস্য প্রয়োজনীয় ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। ইমেজের সাথে ইমেজের বৈশিষ্ট্যতা পূর্ণ ক্যাপশন যোগ করুন।উদাহরণস্বরুপ, আপনার আর্টিকেলের বিষয়বস্তু হলো-“আর্টিকেল লেখার নিয়ম” তাহলে আপনি আর্টিকেল লেখার নির্দেশনা ছবি এবং নিয়মাবলী তথ্য সহ ইমেজ ব্যবহার করতে পারবেন।
কপিরাইট বর্জন করতে হবে
কোনভাবেই অন্যের লেখা কপিরাইট করে লেখা যাবে না। এতে আপনার লেখার মান অন্যের
লেখার নকল বলে গণ্য হবে। সব সময় নিজের ভাষা এবং নিজের ধারণা দিয়ে লিখতে হবে।
কপি রাইট দিয়ে কনটেন্ট লিখলে আপনার ওয়েবসাইটের মান ক্ষুন্ন হতে পারে এবং আপনার
নামে ডিজিটাল আইনে মামলা হতে পারে। নিজস্ব ধ্যান ধারণায় লিখলে আপনার মনের ভাব ও
আপনার জ্ঞান, পাঠকের কাছে মৌলিক ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে আপনার ওয়েবসাইটের
পাঠক বৃদ্ধি হতে পারে।
শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারলাম।
বাংলা আর্টিকেল লেখার জন্য উপরের নিয়ম গুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। পাঠকরা
আপনার পোস্ট পড়ে উপকৃত হবে। এতে আপনার ওয়েবসাইটের নিয়মিত পাঠক বৃদ্ধি পাবে।
আপনার নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে, আপনিও একসময় লিখতে লিখতে লেখক হয়ে যাবেন।
পাঠকরা আপনার দৃষ্টিকটু পোস্ট পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবে। এতে গুগল
কোম্পানি আপনার আর্টিকেল লেখা কনটেন্ট টি গুগলের ওয়েবসাইটের প্রথম পেজে স্থান
করে দিবেন।
আরো পড়ুনঃ ৬৭ টি শুদ্ধ বাংলা বানানোর নিয়ম
তাওহীদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url