থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম - অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করার নিয়ম

থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম সম্পর্কে জানা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সাধারণ ডায়েরি একটি বাংলা শব্দ এর ইংরেজি শব্দ হচ্ছে জিডি। আমরা সাধারনতঃ সাধারণ ডায়েরির পরিবর্তে  জিডি শব্দটি বেশি  ব্যবহার করে থাকি। জিডির অপর নাম সাধারণ ডায়েরি তা আমরা এখনো বুঝি না।

থানায়-সাধারণ-ডায়েরি-করার-নিয়ম

আপনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমি আপনাকে এই কনটেন্ট পোষ্টটির মাধ্যমে জানাতে চাই, থানায় কিভাবে সাধারণ ডায়েরি করে কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানাতে চাই। নিম্নে সেই ব্যাপারে আলোচনা করা হলো।

পেজ সূচিপত্রঃ থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম

থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম

জিডি ইংরেজি শব্দ, এর বাংলা শব্দ হচ্ছে সাধারণ ডায়েরী। বাংলাদেশের প্রতিটি থানা এবং আনাচে-কানাচে প্রতিটি ফাঁড়িতে একটি করে ডায়েরি ২৪ ঘন্টার জন্য সংরক্ষিত রাখা আছে। এবং দিন-রাত মিলে যেকোনো সময় এই ডাইরিতে নাগরিকের অভিযোগ পত্র রেকর্ড করা হয়। এই সাধারণ ডায়েরিটা কোন সময় কখনোও বন্ধ করা হয় না। এই ডায়েরিতে থানার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যেমন-আসামীকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়, এলাকার বিভিন্ন তথ্য রেকর্ড করা হয়, থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আগমন রেকর্ড করা হয় ও কর্মকর্তাদের প্রস্থানের তথ্য ইত্যাদি এই ডায়েরীতে লিপিবদ্ধ করা হয়।

আরোও পড়ুনঃ ১ লাখ টাকায় ব্যবসা

থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম করা হয় যেসব বিষয়ে-

  • মোবাইল ফোনের সিম হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে এবং মোবাইল ফোন চুরি কিংবা হারিয়ে গেলে
  • পরীক্ষার সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে বা পুড়ে গেলে কিংবা পানিতে নষ্ট হলে
  • জমির দলিল হারিয়ে গেলে বা পুড়ে গেলে কিংবা পানিতে নষ্ট হলে
  • পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে জিডি করতে হয়
  • চুরি হলে
  • ডাকাতি হলে
  • মারামারি হলে
  • অন্য কেউ হুমকি দিলে
  • গাড়ি চুরি হলে
  • অন্যান্য অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে
  • মহা মূল্যবান জিনিস হারিয়ে গেলে
  • যেকোনো সমস্যায় পুলিশের সাহায্য নেওয়া যায়
  • নাগরিক সেবা নিশ্চিত হয়
  • কোন মালপত্র হারিয়ে গেলে জিডি করতে হয়
  • কেউ নিখোঁজ হলে জিডি করতে হয়

ইত্যাদি এইসব বিষয় বাদে আরোও অনেক বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করা যায়। “বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী” যারা আমাদের প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা সেবায় নিয়োজিত আছে। তাদেরকেও আমাদের সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা নাগরিক হিসেবে আমাদের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।

সাধারণ মানুষের কাছে জিডির গুরুত্ব  

সাধারণ জনগণের কাছে জিডির গুরুত্ব অপরিসীম। মামলা করার উপযুক্ত নয় এমন ঘটনা ঘটলে, মানুষ থানায় জিডি করতে আসে। আবার কেউ যদি কাউকে ভয়-ভীতি দেখানো হয় কিংবা হুমকি দিয়ে থাকে বা অন্য কোন কারণে যদি তিনি নিরাপত্তাহীনতার অভাব বোধ করেন। বাদী কোন ধরনের অপরাধের আশঙ্কা বোধ করেন তাহলেই তিনি জিডি করতে পারবেন। আপনার জিডি করার পরেই পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। প্রয়োজনবোধে পুলিশ তদন্ত করে থাকে।

নিরাপত্তা দেয়ার পরেও পুলিশ যদি মনে করে জিডির বিষয়টি মামলাযোগ্য। তাহলে পুলিশ মামলা করে থাকে। আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য জিডি বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। অনেক সময় আদালতেও জিডিকে সাক্ষ্য হিসেবে বিচারক বিবেচনা করে থাকে।

  জিডি করার গুরুত্বঃ

  • জিডি করা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া। যা আপনাকে বিভিন্ন ভাবে আইনি সুবিধা দিতে পারে।
  • জিডি আপনার হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পেতে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যতে আইনের জটিলতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
  • জিডি করার মাধ্যমে আপনি আপনার এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশকে জানাতে পারেন। যা একটি নিরাপদ সমাজ গঠনে সহযোগিতা করে।

থানায় কেন জিডি করবেন

আপনি কারো দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় করছেন। আপনি বিষয়টি একেবারে মেনে নিতে পারছেন না। আপনার হারিয়ে যাওয়া কোন জিনিস বা বস্তু উদ্ধার করতে চাচ্ছেন। এরকম বিষয়ে আপনি জিডি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো লাগবে যেমন- জাতীয় পরিচয় পত্র, পেশাগত পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, চেক বই, লাইসেন্স, শিক্ষা সনদপত্র, দলিল ইত্যাদি হারিয়ে গেলেও আপনি জিডি করতে পারবেন।

এছাড়াও আপনার সম্পদের দখল কেউ করতে চাইলে, আপনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে থাকলে, কোন ঘটনার আগাম আশঙ্কা জানতে পারলে বা হারানো বস্তর উপড় জিডি করা হলে, আশঙ্কা জনক ঘটনা ঘটার পর দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে জিডির গুরুত্ব অপরিসীম। হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পেতে এবং আইনিগত সহায়তা নিতে জিডি করা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী।

আপনি জিডি লিখবেন যেভাবে

পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে অথবা সাদা কাগজেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর জিডি লিখতে হবে। জিডিতে অবশ্যই আপনাকে আগাম আশংকার কারণ, যার জন্য আপনি ভয় পাচ্ছেন বা যে ব্যক্তি আপনাকে হুমকি দিয়েছে তার নাম, ঠিকানা, হুমকি যে স্থানে দিয়েছে, যে তারিখে হুমকি দিয়েছে তা বিস্তারিত উল্লেখ করতে হবে। কোন বস্তু হারিয়ে গেলে তার অবয়ব বিস্তারিত বিবরণের সঙ্গে সেই বস্তর একটি ফটোকপি যুক্ত করে দিবেন।

এ বিষয়ে আপাতত আপনার কোন মামলা করার দরকার নেই। এই বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে, পুলিশ যদি ইচ্ছে করে, যে কোন গুরুতর অপরাধ ঘটেছে, তাহলে সেক্ষেত্রে জিডি থেকেও মামলা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

জিডি করবেন আপনি কোন থানায়

জিডির বিষয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলকেই বেশী প্রাধান্য দেয়। যে এরিয়াতে এই ঘটনা ঘটেছে কিংবা যে মহল্লায় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে, সেই এরিয়ার আওতাভুক্ত নিকটস্থ থানায় জিডি করা উচিত। জিডি করতে হলে যে কোন পরামর্শ নিতে থানায় দায়িত্বে যে অফিসার আছে, সেই অফিসারের সহযোগিতা নিবেন। আপনার পক্ষে যদি লেখা সম্ভব না হতে পারে তবে থানায় যে অফিসার দায়িত্ব আছে সেই অফিসার কে লিখে দিতে অনুরোধ করতে পারেন। বিনিময়ে আপনার কোন টাকা-পয়সা লাগবে না।

আরোও পড়ুনঃ অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার উপায়

পুলিশ দেশের যেকোনো জনগণের জিডি গ্রহণ করতে বদ্ধপরিকর। সেক্ষেত্রে আপনার জিডি যদি অস্তিত্বহীন হয়, গুরুত্বহীন হয়, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আপনি যদি জিডি করতে চান, সেক্ষেত্রে পুলিশ জিডির বিষয়টির উপর গুরুত্ব কম দিয়ে থাকে। বারবার একই বিষয়ে যদি আপনি জিডি করতে চান, সেই বিষয়টি যদি তুচ্ছ প্রমাণিত হয়, তাহলে পুলিশ সেই বিষয়টির উপর জিডি ভালোভাবে গ্রহণ করবে না।

জিডি করা 

থানার ডিউটি অফিসার জিডি নথিভুক্ত করে থাকেন। সেক্ষেত্রে তিনি একটি নির্দিষ্ট ডায়েরিতে জিডির নম্বর সহ বিভিন্ন তথ্য লিখে রাখেন। সাধারণ ডায়েরি মূলত দুই কপি করা হয়। একটি থানায় সংরক্ষিত থাকে এবং অন্যটিতে জিডি নম্বর লিখে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর ও সীলমোহর দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়। অভিযোগকারী যদি শিক্ষিত হয় তাহলে নিজেই জিডি লিখতে পারেন। প্রয়োজনে থানার কর্মকর্তারাও জিডি লিখে দিয়ে থাকেন। প্রতিটি জিডিতে একটি করে নম্বর দেওয়া হয়। ফলে কোন অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেউ আগের তারিখ দেখিয়ে জিডি করতে পারে না।

জিডির কপিটি আপনার কাছে অবশ্যই সংরক্ষণ করে রাখবেন। আপনার জিডির কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর কর্তব্যরত কর্মকর্তা থানার ওসির কাছে পাঠাবেন। আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি আমলযোগ্য হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। কি ব্যবস্থা পুলিশ নিচ্ছে তা আপনাকে অবশ্যই অবহিত করবে।

জিডির নমুনা

বরাবর,

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা

...........থানা

ঢাকা।

বিষয়ঃ এইচ, এস, সি সার্টিফিকেট হারানোতে ডায়েরীভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন।

মহোদয়,

আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী নিজ থানায় আপনার অধীনে উপস্থিত হয়ে লিখিতভাবে জানাচ্ছি যে, আমার এইচ, এস, সি পরীক্ষার সার্টিফিকেট আজ সকাল আনুমানিক ১০:০০ ঘটিকার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে একটি ফটোকপি করার দোকান থেকে হারিয়ে গেছে।

এমতাবস্থায়, উপরোক্ত কারণে হারানোর বিষয়টি ডায়েরীভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

সার্টিফিকেটের বিবরণঃ

ক্রমিক নম্বর পরীক্ষার নাম শিক্ষাবর্ষ রেজিস্ট্রেশন নম্বর রোল নম্বর শিক্ষাবোর্ড
- - - - - -

দাখিলকারী,

স্বাক্ষরঃ...................

পূর্ণ নামঃ……..........

ঠিকানাঃ.................

ফোন নম্বরঃ............

তারিখঃ...................

জিডি সম্পর্কে আইন যা বলে

১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের ৪৪ ধারা ও ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারা ও ১৫৫ ধারা জিডির ক্ষেত্রে অনুসরণ করে। থানায় সংরক্ষিত নির্ধারিত ফর্মে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে জিডি লিখবেন। থানার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বর্ণনাটি জিডির ৬৫ নম্বর ফরমে নথিভুক্ত করবেন। অনেকে জিডির এজাহারের মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন। মনে রাখা প্রয়োজন জিডি ও এজাহারের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। জিডি হল কোন আগাম ঘটনা ঘটার আগেই ভয় এবং আশঙ্কা থেকে রক্ষা পেতে জিডি করতে হয়।

নিজে নিকটস্থ থানায় গিয়ে লিখিত আকারে জিডি লিখে জমা দিতে হয়। আর এজাহার বলতে আমরা যা বুঝি, কোন একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে অভিযোগ দায়ের করা হয় তাকে এজাহার বলে। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কোন বিষয়কে গুরুত্ব মনে করে জিডিকে এই এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়।   

অনলাইনের মাধ্যমে জিডি করার নিয়ম

বিশেষ নির্দেশিকাঃ

  • আপনার হারানো বস্তু ও প্রাপ্তি সংক্রান্ত জানমালের যেকোনো বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে হলে, আপনাকে এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হবে।
  • সংশ্লিষ্ট থানা হতে আপনার অভিযোগ কি ধরণের সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আপনাকে সেই বিষয়ে অবগত করা হবে।
  • আপনি যে বিষয়ে অভিযোগ দিতে এসেছেন সে বিষয়টি যদি জিডি যোগ্য হয় তাহলে সেটি জিডি নম্বর এবং তদন্তকারী অফিসারের বিবরণী সহ আপনাকে ডিজিটাল জিডির কপি থানায় সাবমিট করতে হবে।
  • অভিযোগের বিষয়টি যদি মামলার যোগ্য হয় সেক্ষেত্রে অভিযোগের প্রিন্ট কপি অথবা অভিযোগের কোড নম্বর সহ আপনাকে থানায় সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে।

অভিযোগ করার জন্য যা প্রয়োজনঃ

  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর।
  • আপনার চলতি মোবাইল নম্বর।
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

অনলাইন জিডি অ্যাপস এবং ওয়েব পোর্টালের সুবিধা সমূহঃ

  • খুব সহজেই আপনার অভিযোগটি পুলিশের কাছে জানাতে পারবেন।
  • আপনার অভিযোগের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
  • আপনার অভিযোগটি যে তদন্ত করবে, সেই তদন্তকারী অফিসারের সহিত টেলিফোনের মাধ্যমে কিংবা অনলাইনে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।

অনলাইনে এর মাধ্যমে জিডি করার নিয়মাবলীঃ

  • প্রথম ধাপঃ আপনি প্রথমে রেজিস্ট্রেশনে ক্লিক করুন> আপনার পরিচয়পত্র নম্বর তুলুন> আপনার বর্তমান ঠিকানাটি তুলুন> আপনার লাইভ ছবি তুলুন> আপনার চলতি মোবাইল নম্বর লিখুন এবং পূর্বে প্রদানকৃত পাসওয়ার্ড লিখুন। আপনার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য SMS এর মাধ্যমে আপনার মোবাইলে নম্বরে একটি ওটিপি কোড নাম্বার পাঠানো হবে। ওটিপি কোডটি যথাস্থানে সঠিকভাবে মোবাইলে বসাতে হবে। লগ ইন পেজে ইউজারের ঘরে আপনার মোবাইল নম্বর এবং পূর্বে প্রদানকৃত পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে হবে। নিম্নের চিত্রে তুলে ধরা হলো-

থানায়-সাধারণ-ডায়েরি-করার-নিয়ম

  • দ্বিতীয় ধাপঃ কি বিষয়ের উপর আপনার অভিযোগ এবং আপনি কি রকম বস্তু হারিয়েছেন অথবা কি ধরনের বস্তু আপনি খুঁজে পেয়েছেন তা নির্বাচন করুন এবং আপনি কোন জেলায় থেকে ও আপনি কোন থানা থেকে জিডি করতে চান তা নির্বাচন করুন। কোন সময় ঘটনাটি ঘটেছে এবং কোন স্থানে ঘটেছে তা লিখে “পরবর্তী” ধাপ বাটনে ক্লিক করুন।

আরোও পড়ুনঃ বাংলাদেশের প্রতিটি থানার ওসিদের মোবাইল নম্বর

  • তৃতীয় ধাপঃ আপনার বর্তমান ঠিকানা ও ঘটনা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য লিখুন। অভিযোগ সম্পর্কিত কোন ডকুমেন্ট থাকলে সেগুলো সংযুক্ত করুন। “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করে জমা দিতে হবে অথবা এডিট বাটনে ক্লিক করে ফর্ম পূরণ করতে কোন সমস্যা হলে তা সমাধান করে নিতে হবে। আপনার আবেদন যদি সম্পূর্ণ হয় পরবর্তীতে লগইন করে আপনি আপনার জিডি এর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
  • ইমেইলঃ bangladesh@poiice.gov.bd.
  • ফ্যাক্সঃ +৮৮০-২-৯৫৫৮৮১৮
  • অনলাইনে জিডি করার ওয়েবসাইটঃ http://www.police.gov.bd. সাইটে গিয়ে “Citizens help request”-এ ক্লিক করতে হবে।

জিডি করার ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে

থানায় সাধারণ ডায়েরি করা মানে আপনি একটি মামলা করলেন। তাই জিডি করার আগে এবং জিডি করার পরে উভয় সময়ই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তাই নিচে কিছু সতর্কতা তুলে ধরা হলো- 

জিডি করার আগেঃ

  • আপনার এলাকার আওতাভুক্ত নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে।
  • জিডি করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা উচিত যেমন- ঘটনার বিবরণ,ঘটনার সময়, ঘটনার স্থান এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিবরণাদি (যদি আপনার মনে থাকে)।
  • যদি আপনার কোন জিনিস হারিয়ে যায়, তাহলে তার বিবরণ যেমন- জিনিসের রং কেমন, জিনিসের আকার কেমন এবং অন্যান্য জিনিসের সনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে হবে।
  • আপনার জিডি এক কপি সংরক্ষণে রাখতে হবে।
  • আপনি যদি অনলাইনে জিডি করেন তাহলে নিশ্চিত করুন যে আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে জিডি করেছেন কিনা এবং আপনার তথ্য সুরক্ষিত আছে কিনা।

জিডি করার পরেঃ

  • আপনার জিডি করার পর পুলিশ আপনার অভিযোগটি তদন্ত করতে পারে।
  • আপনার জিডির উপর ভিত্তি করে যদি তদন্ত করতে হয়, তাহলে তদন্তকারী অফিসারকে সহযোগিতা করতে হবে।
  • জিডির কপি ভবিষ্যতে যে কোন আইনি প্রক্রিয়ার জন্য আপনার প্রয়োজন হতে পারে, তাই এটি নিরাপদে সংরক্ষিত রাখুন।

আপনি ভুয়া কোন তথ্য দিয়ে জিডি  করবেন না কিংবা হয়রানি করার জন্য মিথ্যা জিডি করবেন না, জিডির উপর বর্ণনামতে ঘটনা যদি মিথ্যা হয় তাহলে ওই জিডির উপর হয়রানিমূলক মামলায় আপনি জড়িয়ে পড়তে পারেন। জিডি করার সময় এই সতর্কতাগুলো অবলম্বন করলে, আপনি ভবিষ্যতে যে কোন আইনি জটিলতা এড়িয়ে যেতে পারবেন।

লেখক এর মন্তব্যঃ  থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম

থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে উপরোক্ত পোস্ট গুলিতে বুঝিয়ে দেওয়া হলো। আমি আশা রাখি যে, আপনাকে আর জিডি করতে বেগ পোহাতে হবে না। আপনিতো জিডি সম্পর্কে সব নিয়ম-কানুন জেনে গেলেন। তাই আমরা বলতে পারি অপরাধীকে না বলি আর পুলিশকে সহযোগিতা করি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

তাওহীদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url